পোস্টগুলি

মানুষ নিন্দা কেন করে ? নিন্দা কি এবং নিন্দার প্রকার ?

ছবি
  কটূক্তি ও কুৎসা মানুষের হৃদয়ে আঘাত করে । অস্ত্র শরীরের বাহিরে আঘাত করে, কটূক্তি ও কুৎসা মানুষের হৃদয়ে আঘাত করে। তাই কটূক্তি ও কুৎসা করার আগে এর দূরগামী পরিনাম নিয়ে  ভাবা উচিৎ। এই কুৎসার সমার্থক শব্দ হল নিন্দা।   নিন্দা:-নিন্দা কথার সাধারণ অর্থ - কুৎসা, কলঙ্ক, দোষারোপ করা,  কটূক্তি  করা ইত্যাদি। নিন্দা আমাদের জীবন যুদ্ধের পৃষ্ঠভূমিতে   হিংসুক মানুষদের  দ্বারা সঞ্চালিত একটি দুষ্প্রচার (প্রপোগান্ডা) যুদ্ধ। এই  দুষ্প্রচার (প্রপোগান্ডা) যুদ্ধে যে সকল মানুষ অন্য লোকের মিছা মিছি  নিন্দা করে তাদের বলা হয়  নিন্দুক। নিন্দার প্রকার। নিন্দা সাধারণভাবে  দুই প্রকার-  ১.দোষ / অন্যায় ও অপরাধ করলে তার যে নিন্দা করা হয় তাকে বলা হয় ন্যায় / নীতি বাচক  নিন্দা । ২.মানুষ ঈর্ষায় যখন মিছা মিছি   অন্য লোকের  নিন্দা করে তখন তাকে বলা হয় ঈর্ষার নিন্দা । ঈর্ষার নিন্দাকেই  আজকাল  সাধারণ লোকেরা নিন্দা বলে থাকেন।  নিন্দার কারণ।   মানুষের কাম-ক্রোধ-লোভ-মোহ-মদ(অহংকার),  মাৎসর্য্য (হিংসা ), ঈর্ষা,ও আত্...

মানব জীবনে সুস্থ ভাবে বাঁচার জন্য অতি মূল্যবান শিক্ষামূলক নীতি বাক্য বা উপদেশ।

ছবি
 নীতি বাক্য।  A.পিতা ও পুত্র নিয়ে নীতি বাক্য।  "लालयेत् पंच वर्षाणि दश वर्षाणि ताडयेत् । प्राप्ते तु षोडशे वर्षे पुत्रे मित्रवदाचरेत् ।।" " লালয়েত  পঞ্চ বর্ষানি দশ বর্ষানি  তাড়য়ে‍ত । প্রাপ্তে তু ষোড়শে বর্ষে পুত্রে  মিত্রবদাচরেৎ ॥" এর বাংলা অর্থঃ- জন্ম থেকে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত পুত্রকে অতি যত্নে লালন পালন করতে হয়। পুত্রের বয়স দশ বছর হলে তাকে প্রয়োজনে শাসন করতে হয়। পুত্রের বয়স ষোল বছর হলে তার সাথে বন্ধুর মতো ব্যবহার করতে হয়। B . জ্ঞানী  বিষয়ক নীতি বাক্য। 1. . স্বগৃহে পূজ্যতে মূর্খ:। স্বগ্রামে পূজ্যতে প্রভু:। স্বদেশে পূজ্যতে রাজা বিদ্বান্ সর্বত্র পূজ্যতে ।। এর বাংলা অর্থঃ-মূর্খ কেবলমাত্র নিজের ঘরেই পূজিত হন (সম্মান পান ) এবং গ্রামের প্রধান (প্রভু এর অর্থঃগ্রামের প্রধান )  কেবল নিজের গ্রামে পূজিত হন (সম্মান পান)। রাজা কেবলমাত্র নিজের রাজ্যেই পূজিত হন (সম্মান পান) কিন্তু  বিদ্বানের  পূজা (সম্মান) সর্বত্র হয়। 2 . পণ্ডিতে চ গুণা সৰ্ব্বে মূর্খে দোষা হি কেবলম্। তস্মান্মুখ সহস্রেভ্যঃ প্রাজ্ঞ একো বিশিষ্যতে ॥ এর বাংলা অর্থঃ- জ্ঞানীর মধ্যে ...

ব্রহ্মা ,বিষ্ণু ,ও শিবের আয়ু কত?

ছবি
হে প্রভু ,হে শ্রী হরি, হে নারায়ণ ,আপনিই অনন্ত ,আপনিই এই সৃষ্টির  স্রষ্টা এবং আপনি ই আদি এবং আপনিই অন্ত। এই লেখাটিতে আপনার কথা বর্ণনা করিলাম,ভুল ত্রুটি মার্জনা করিবেন। আপনার শ্রী চরণে অনন্ত কোটি বার প্রণাম। 🙏 শ্রী মহা বিষ্ণুর ষোড়শ (১৬) নাম স্তোত্রম। ব্রহ্মা ,বিষ্ণু ,ও শিবের আয়ু কত? আমাদের বেদে এই বিষয়ে কোনো  কিছু  স্পষ্ট  ভাবে উল্লেখ নেই তবে পরব্রহ্ম কে অনাদি  ,অনন্ত  বলা হয়েছে। আমাদের পুরান গুলিতে ভগবানদের আয়ু নিয়ে নানা মুনির নানা মত,ভিন্ন ভিন্ন  ভগবানের নামে  ভিন্ন ভিন্ন পুরান তৈরি হয়েছে এবং প্রত্যেক পুরান তাঁর দেবতা কে  সর্বোচ্চ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করে। এগুলি ঘটার কারন পুরানগুলি  স্মরণ করে লেখা হয়েছে এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম মুখেমুখে প্রচারিত এবং লিপিকার দের পরিমার্জিত ,পরিবর্তিত ও সংশোধিত হয়েছে। সেই জন্য পুরানগুলির মধ্যে স্থান ,কাল ও ভাষা  ভেদে পার্থ্যক্য লক্ষ্য করা যায়। দ্বাপর যুগে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুন কে যে বিরাট রূপ /বিশ্বরূপ দেখিয়েছিলেন তাতে ঈশ্বরের সমস্ত রূপ গুলিকে একসাথে ও এক ঈশ্বরের মধ্যে  দেখতে পাওয়া  যায়। তাই...

মানুষ কি ভাবে শিক্ষা গ্রহণ করে ? শিক্ষা ও বুদ্ধির সম্পর্ক কি? আসল/প্রকৃত শিক্ষিত মানুষ চেনার সহজ উপায়।

ছবি
মাতেব রক্ষতি  পিতেব হিতে নিযুঙক্তে, কান্তেব চাভি রময়ন্তপনীয় খেদম। লক্ষ্মী  তনোতি বিতনোতি চ  দিক্ষু কীর্তিম, কিং কিং ন সাধয়তি কল্পলতেব বিদ্যা ।। এর বাংলা অর্থঃ-বিদ্যা মায়ের মতো রক্ষা করে, পিতার মতো উপকার করে, স্ত্রীর মতো ক্লান্তি দূর করে, মনকে প্রসন্ন করে, লক্ষ্মীকে (ধন) প্রসারিত করে, চারিদিকে খ্যাতি ছড়িয়ে দেয় , কল্পলতার মতো অসম্ভবকে সম্ভব করে।  এই জন্য বলা হয়- জ্ঞানং পরমং বলম  । শিক্ষা এবং  বিদ্যা   ও বুদ্ধি। শিক্ষা :-সহজ সরল ভাষায় এবং এক কথায় ,কোনো কিছু শিখা বা  জ্ঞান বা দক্ষতা অর্জনকেই শিক্ষা বলা হয়।  বুদ্ধি :-সংক্ষেপে এবং সহজ সরল ভাষায় ,  জ্ঞান অর্জন এবং জ্ঞান কে প্রয়োগ কারণ ক্ষমতা কে বুদ্ধি বলা হয়। বিদ্যা :-বিদ্যার  অর্থ হলো- জ্ঞান। অধ্যয়ন বা শিক্ষার দ্বারা অর্জিত জ্ঞানকে  বিদ্যা বলা হয় । মানুষ  কি ভাবে শিক্ষা গ্রহণ করে । মানুষ অধ্যয়নের থেকে (পড়ার থেকে)অভ্যাস (প্র্যাকটিস) করে বেশি শিখে তবে ভুল থেকে মানুষ সবচেয়ে বেশি ও ভালোভাবে শিখে, কিন্তু সে ভুলটি যেন না হয় জীবনের শেষ ভুল। ভুল থেকে শিখতে হলে ভুলের ...

পৈতা পরার (পাল্টানোর) নিয়ম ও মন্ত্র।

ছবি
  উপনয়ন কি ? উপনয়ন সনাতন(হিন্দু) ধর্মাবলম্বী বালকদের শিক্ষারম্ভকালীন একটি  বৈদিক ও শাস্ত্রীয় অনুষ্ঠান,যেখানে বালক গন পৈতা ধারণ করেন। পৈতা ধারণের নিয়ম। প্রথমে বিশুদ্ধ জল দিয়ে বা সম্ভব হলে গঙ্গা জল দিয়ে পৈতাকে   ধুয়ে ফেলুন, যাতে এটির উপর  থাকা স্পর্শ সংস্কারগুলি দূর হয়। এর পরে পৈতাকে উভয় হাতের মধ্যে রেখে, গায়ত্রী মন্ত্রটি মানসিক বা নমনীয় স্বরে জপ করুন।  গায়ত্রী মন্ত্র;- ওঁ ভূর্ভুবঃ স্বঃ তৎ স বিতুর্বরেণ্যং ভর্গো দেবস্য ধীমহি ধিয়ো য়ো নঃ প্রচোদয়াৎ।। গায়ত্রী মন্ত্রের অর্থ: হে আমার পরম শ্রদ্ধেয় প্রকৃতি দেবী (প্রকৃতি), যিনি দেবতা (দিব্য সত্তা)-দের মধ্যে প্রসিদ্ধ, আমরা আপনাকে ধ্যান করি। আমাদের মনকে শুভ পথে পরিচালিত করুন। আমাদের ভৌত জগৎ (ভূ) থেকে আকাশীয় জগৎ (ভুব:) হয়ে উচ্চতর অস্তিত্বের স্তরে (স্ব:) পৌঁছে দিন। এর পরে, একটি থালায়  ফুলের কিছু পাপড়ি ছিটিয়ে দিন এবং শ্রদ্ধার সাথে তার উপর পৈতাকে স্থাপন করুন। পৈতার  এক একটি সুত্রে এক একজন দেবতা অবস্থান করেন ,তাঁদের আবাহন করুন ।   দেবতাদের আবাহন মন্ত্র। ১.ওঁ কারং  অবাহামি।  ২.ওঁ অ...

দীপাবলি ও ধনত্রয়োদশী বা ধনতেরাস ।

ছবি
 দীপাবলি ও ধনত্রয়োদশী বা ধনতেরাস । দীপাবলি" শব্দটির(নামটির) অর্থ " দীপের সমষ্টি।  এই দিন  সনাতন ধর্মের লোকেরা (হিন্দুরা) তাঁদের ঘরের বাহিরে ও ভিতরে সারি সারি দীপ জ্বালিয়ে তাঁদের ঘর ও বাহির আলোকিত করেন , কারণ জনশ্রুতি অনুসারে এই দিনে  ভগবান রাম, রাবণকে পরাজিত করার পরে এবং তাঁর নির্বাসনের ১৪ বছর পূর্ণ করার পরে তাঁর রাজ্য অযোধ্যাতে ফিরে আসেন। অযোধ্যার লোকেরা তাদের প্রিয় রাজার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে উপলক্ষ্য করে  তাঁদের ঘর ,নগর  সাজিয়ে মাটির প্রদীপ দিয়ে আলোকিত করে এই দিনটি   উদযাপন করেছিলেন। ২.সমুদ্র মন্থনের সময় , দেবী লক্ষ্মী ক্ষীর সাগর থেকে আদি লক্ষ্মীরূপে উত্থিত  হয়েছিলেন এবং ভগবান বিষ্ণু তাঁকে এই দিনে তাঁর স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন। সেইজন্য এই শুভ দিনে, দেবী আদি লক্ষ্মী, শ্রী হরি  বিষ্ণুর এবং ভগবান গনেশের পূজা করা হয়। ৩. ভগবান কৃষ্ণ নরকাসুরের শিরশ্ছেদ করার পর, লোকেরা তাঁদের ঘর ,নগর  সাজিয়ে মাটির প্রদীপ দিয়ে আলোকিত করে এই দিনটি   উদযাপন করেছিলেন ।    দীপাবলি/দিওয়ালি: পূজার আচার অনুষ্ঠান ;- উপরিউক্ত কারনে...

সনাতন হিন্দুধর্মের আসল পতাকা (flag)এবং সনাতন ধর্মে বর্ণিত ১৪ লোকের বিবরণ ও সনাতন ধর্মে ব্যবহৃত শব্দাবলীর সঠিক অর্থ।

ছবি
 পতাকা হল সাধারণত কাপড়ের তৈরি কোন ব্যক্তি ,বস্তু অথবা সংস্থার একটি বিশেষ অর্থবহ নিশান। পতাকা শব্দের  প্রতিশব্দ হল ,কেতন, ধ্বজা,বৈজয়ন্তী (উর্দ্দু: ঝাণ্ডা)ইত্যাদি । যেমন সমস্ত দেশের নিজস্ব পতাকা আছে ,তেমনি সমস্ত ধর্মেরও  নিজস্ব পতাকা আছে ,কিন্তু অনন্ত কোটি ব্রহ্মান্ডে ও চিন্ময় জগতে যে সনাতন বৈদিক ধর্ম বিদ্যমান সেই সনাতন হিন্দু  ধর্মের বেশির ভাগ লোকই জানেন না যে সনাতন হিন্দু  ধর্মের আসল পতাকা কোনটি ? সনাতন ধর্মের আসল পতাকা টি পাঁচ টি রং দিয়ে তৈরি। এই রং গুলি হল শ্বেত ,লোহিত ,পীত ,হরিৎ ,নীল অর্থাৎ  সাদা ,লাল ,হলুদ ,সবুজ ,ও নীল। সাদা রং সত্যের প্রতীক। লাল রং ক্ষমার প্রতীক। হলুদ রং দয়ার প্রতীক। সবুজ  রং শান্তির প্রতীক। নীল রং বিশ্বমৈত্রীর প্রতীক। এর মাঝে  গোলাকার রিংয়ের মধ্যে স্টার এবং তার মধ্যে স্বস্তিক চিহ্ন বিদ্যমান ,এই পতাকা টিই  ভগবান শ্রী কৃষ্ণ ব্যবহার করতেন। সনাতন ধর্মের আসল পতাকা সনাতন ধর্মে বর্ণিত ১৪ লোকের বিবরণ।   পুরাণ ও অথর্ববেদে চোদ্দটি লোকের উল্লেখ করা রয়েছে – সাতটি ঊর্ধ্বলোক এবং সাতটি নিম্নলোক। ঊর্ধ্বলোকগুলো হল – ভূ...