The Origin of Durgā Worship : দেবী দুর্গা এবং তাঁর বিভিন্ন রূপ। দুর্গাপূজা প্রথম কোথায় শুরু হয়েছিল ? বাংলার ও বাঙালির দুর্গাপূজা।

                                               ওঁ মা দুর্গা।
ত্বমেব পরমাত্মিকা, ত্বমেব মহালক্ষ্মীঃ, ত্বমেব যোগমায়ী।
জীবসত্ত্বস্য পালনং পোষণং ধারণং রক্ষণং চ সর্বং ত্বমেব ভাবসি॥

Yogamāyā and the Origin of Durgā Worship
The Parabrahma (Supreme Being) creates Yogamāyā according to His divine will. Yogamāyā is thus the Śakti (Power) of Lord Viṣṇu and is Mātā Prakṛti (Mother Nature) Herself. In the limitless expanse of countless universes, apart from Lord Śrī Hari Nārāyaṇa, no one possesses a Māyā (divine power) like Hers. She is known as Yogamāyā.

In Vaiṣṇava tradition, She is worshipped as Nārāyaṇī, while the Śāktas (followers of Śakti) worship Her as the Ādiśakti, the Primordial Energy. This very goddess Yogamāyā is later described in the Purāṇas and Upapurāṇas as Devī Durgā.

Mother Durgā
She is Mahāmāyā Sanātanī — the eternal, supreme manifestation of divine illusion, energy, and virtues. Though She is one, Her manifestations are many.
She is Devī Nārāyaṇī, Anirvacanīyā (beyond description), Aparamahimamayi (possessing infinite glory), and the consort of the Supreme Brahman.
She is also Devī Kātyāyanī, daughter of Sage Kātyāyana, and the Ādiśakti Durgā, destroyer of all sufferings (Durgatināśinī).

Types of Durgā Pūjā
Śāradīya Durgā Pūjā – performed in the month of Āśvina (autumn season)

Vasantī Durgā Pūjā – performed in the month of Chaitra (spring season)

Akāl Bodhana – The Untimely Awakening
According to the Kālikā Upapurāṇa and Bṛhaddharma Upapurāṇa, during the battle between Rāma and Rāvaṇa, Lord Rāma worshipped Goddess Durgā in autumn (Śarat season). As per Hindu scriptures, the deities normally rest during this period, and it is not considered the proper time for worship.
Therefore, the autumnal invocation of the Goddess is called Akāl Bodhana — “the untimely awakening”.

The Origin of Durgā Pūjā
Among the many Purāṇic accounts of Goddess Durgā and Her worship, the most well-known narrative is found in the Śrī Śrī Caṇḍī or Devī Māhātmyam, a part of the Mārkaṇḍeya Purāṇa.

This revered scripture, consisting of thirteen chapters and seven hundred verses, is central to Durgā Pūjā rituals. It narrates three principal divine exploits of the Goddess and one introductory story explaining the origin of Durgā Pūjā.

The Story of King Suratha
As the introduction and connecting thread of the Devī Māhātmyam, the tale of King Suratha unfolds:

In ancient times, King Suratha lost his kingdom and wandered into the forests until he reached the hermitage of Sage Medhā.
At the same time, a merchant named Samādhi, betrayed by his wife and sons, arrived at the same hermitage.

Though Suratha had lost his kingdom and Samādhi had lost his family, both remained unable to detach their minds from their worldly losses. They sought the counsel of Sage Medhā and shared their sorrow.

The sage explained that this attachment was caused by Māyā, whose presiding deity is the great Goddess Mahāmāyā.
When Mahāmāyā is pleased, the mind attains peace, happiness, and even lost fortune may be restored.

Sage Medhā then narrated to them the three divine stories of the Goddess:

The slaying of Madhu and Kaiṭabha

The destruction of Mahiṣāsura

The defeat of Śumbha and Niśumbha

Of these, the most celebrated is the Mahiṣāsura-vadha — the glorious slaying of the buffalo-demon Mahiṣāsura by Goddess Durgā.


পরব্রহ্ম তাঁর ইচ্ছা অনুসারে  যোগ মায়া কে সৃষ্টি করেন।  তাই যোগমায়া  হলেন বিষ্ণু শক্তি । ইনি ই  মাতা প্রকৃতি,এই অনন্ত কোটি ব্রহ্মাণ্ডে শ্রী হরি নারায়ণ বাদ দিয়ে এনার মত মায়া অন্য আর কারও নেই  তাই ইনি  যোগমায়া এবং বৈষ্ণব আচারানুষ্ঠানে এঁনাকে নারায়ণী বলা হয় । শাক্তরা এঁনাকে আদি শক্তি রূপে পূজা করেন। এই দেবী যোগমায়াই পরে পুরান ও উপ পুরাণে আখ্যায়িত হন দেবী দূর্গা নামে।
মা দুর্গা।
তিনি মহামায়া সনাতনী, শক্তিরূপা,গুণময়ী। তিনি এক,তবু প্রকাশ বিভিন্ন,
 তিনিই দেবী নারায়ণী,,তিনি অনির্বচনীয়া,অপারমহিমময়ী,পরব্রহ্মমহিষী;তিনিই আবার দেবী ঋষি কাত্যায়নের কন্যা কাত্যায়নী,তিনিই আদিশক্তি দুর্গা দুর্গতি নাশিনী ।
দূর্গা পূজার প্রকার।  
১.শারদীয়া দুর্গাপূজা
২.বাসন্তী দুর্গাপূজা
আশ্বিন মাসের দুর্গাপূজা শারদীয়া দুর্গাপূজা এবং চৈত্র মাসের দুর্গাপূজা বাসন্তী দুর্গাপূজা নামে পরিচিত।
অকালবোধন।
কালিকা উপপুরাণ ও বৃহদ্ধর্ম উপপুরাণ অনুসারে, রাম ও রাবণের যুদ্ধের সময় শরৎকালে দুর্গাকে পূজা করা হয়েছিল। হিন্দুশাস্ত্র অনুসারে, শরৎকালে দেবতারা ঘুমিয়ে থাকেন। তাই এই সময়টি তাদের পূজার যথাযথ সময় নয়। অকালের পূজা বলে তাই এই পূজার নাম হয় "অকালবোধন''। 
দূর্গা পূজার সৃষ্টি:-
দুর্গা ও দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে যতগুলি পৌরাণিক কাহিনী  প্রচলিত আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় কাহিনীটি পাওয়া যায় শ্রীশ্রীচণ্ডী বা দেবীমাহাত্ম্যম্-এ। দেবীমাহাত্ম্যম্ আসলে মার্কণ্ডেয় পুরাণ-এর একটি নির্বাচিত অংশ। 
এই কাহিনীটি হিন্দুরা এতটাই মান্য করেন যে শ্রীশ্রীচণ্ডীর পাঠ দুর্গাপূজার একটি অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে গিয়েছে। এতে তেরোটি অধ্যায়ে মোট সাতশোটি শ্লোক আছে। শ্রীশ্রীচণ্ডী বা দেবীমাহাত্ম্যম্-এ দুর্গাকে নিয়ে প্রচলিত তিনটি কাহিনী ও দুর্গাপূজা প্রচলনের একটি কাহিনী রয়েছে।
দুর্গাপূজা প্রচলনের  কাহিনী
রাজা সুরথের কাহিনী
রাজা সুরথের কাহিনীটি শ্রীশ্রীচণ্ডী-র প্রধান তিনটি কাহিনীর সূচনা ও যোগসূত্র। প্রাচীন কালে সুরথ নামে এক রাজা তার রাজ্য হারিয়ে জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরছিলেন ,ঘুরতে ঘুরতে তিনি এসে পৌঁছালেন  মহর্ষি মেধার আশ্রমে। অন্যদিকে সমাধি নামে এক বণিক তার স্ত্রী ও সন্তানদের আচরণে ক্ষুব্দ হয়ে ঘর ছেড়ে জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরছিলেন ,ঘুরতে ঘুরতে তিনি ও এসে পৌঁছালেন  মহর্ষি মেধার আশ্রমে।রাজ্য হারিয়ে রাজা সুরথের মনে রাজ্যের প্রতি মায়া ছিল ,তিনি সেটা ভুলতে পারছিলেন না ,অন্যদিকে সমাধির মনে স্ত্রী ও সন্তানদের  প্রতি মায়া ছিল,তিনি ও তার স্ত্রী ও সন্তানদের ভুলতে পারছিলেন না। এই অবস্থায় তারা দুজনে মহর্ষির কাছে গিয়ে ,তাদের অন্তরের ব্যথার কথা জানালেন।মহর্ষি মেধা তখন বললেন এর কারণ হল মায়া এবং মায়ার অধিষ্টাত্রী দেবী হলেন মহামায়া। দেবী মহামায়া সন্তুষ্ট হলেই ,মনে সুখ ,শান্তি আসে ,এবং হারিয়ে যাওয়া বস্তু ফিরে আসে। মহর্ষি মেধা রাজা সুরথ ও বণিক সমাধির কাছে বর্ণনা করলেন দেবী মহামায়ার তিনটি কাহিনী 
১.মধুকৈটভের কাহিনি
২.মহিষাসুরের কাহিনি
৩.শুম্ভ-নিশুম্ভের কাহিনি
এই  তিনটি কাহিনীর মধ্যে সর্বাধিক প্রচলিত ও প্রসিদ্ধ হল মহিষাসুরের কাহিনি (মহিষাসুর বধ)।


মহিষাসুর এবং মহিষাসুর বধ 
 রম্ভ নামক অসুর মহাদেবকে তপস্যায় সন্তুষ্ট করে তার নিকট ত্রিলোক বিজয়ী পুত্রবর প্রার্থনা করায় মহাদেব তাকে সেই বর প্রদান করেন। রম্ভ এই বরলাভ করে অসুর রাজ্যে ফেরার পথে এক মহিষের ন্যায় অপ্সরা কে দেখে কামার্ত হন এবং ওই অপ্সরাকে বিবাহ করে রম্ভাসুর। বিবাহের পর  মহিষের ন্যায়  অপ্সরা ও রম্ভের  যে সন্তান হয় তার নাম হয় মহিষাসুর। ব্রহ্মাকে তপস্যায় সন্তুষ্ট করে তার নিকট বর পেয়ে মহিষাসুর  দেব,দানব ও  মানবের অবধ্য  হয়ে গিয়েছিলেন 

 মহিষাসুর দেবগণকে একশতবর্ষ ব্যাপী এক যুদ্ধে পরাস্ত করে স্বর্গের অধিকার কেড়ে নিলে, বিতাড়িত দেবগণ প্রথমে প্রজাপতি ব্রহ্মা এবং পরে তাঁকে মুখপাত্র করে  নারায়ণের সমীপে উপস্থিত হলেন। মহিষাসুরের অত্যাচার কাহিনি শ্রবণ করে নারায়ণ  অত্যন্ত ক্রোধান্বিত হলেন। সেই ক্রোধে তাঁর  মুখমণ্ডল ভীষণাকার ধারণ করল  এবং মহাতেজ নির্গত হল।  সু-উচ্চ হিমালয়ে স্থিত ঋষি কাত্যায়নের আশ্রমে সেই বিরাট তেজঃপুঞ্জ একত্রিত হয়ে এক নারীমূর্তি ধারণ করল। কাত্যায়নের আশ্রমে আবির্ভূত হওয়ায় এই দেবী কাত্যায়নী নামে অভিহিতা হলেন।

এই দেবীই অষ্টাদশভূজা মহালক্ষ্মী রূপে মহিষাসুর বধের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন । দেবী ও তাঁর বাহনের সিংহনাদে ত্রিভুবন কম্পিত হতে লাগল। মহিষাসুর সেই প্রকম্পনে ভীত হয়ে প্রথমে তাঁর সেনাদলের বীরযোদ্ধাদের রণক্ষেত্রে পাঠাতে শুরু করলেন। দেবী ও তাঁর বাহন সিংহ প্রবল পরাক্রমে যুদ্ধ করে একে একে সকল যোদ্ধা ও অসুরসেনাকে বিনষ্ট করলেন। অবশেষে   মহিষাসুর স্বয়ং দেবীর সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করলেন। যুদ্ধকালে ঐন্দ্রজালিক মহিষাসুর নানা রূপ ধারণ করে দেবীকে  বিমোহিত করার প্রচেষ্টায় রত হলেন; কিন্তু দেবী সেই সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিলেন। যখন মহিষাসুর  অহঙ্কারে মত্ত হয়ে প্রবল গর্জন করল। তখন দেবী  দেবী লম্ফ দিয়ে মহিষাসুরের উপর চড়ে তাঁর কণ্ঠে পা দিয়ে শূলদ্বারা বক্ষ বিদীর্ণ করে তাকে বধ করলেন। অসুরসেনা হাহাকার করতে করতে পলায়ন করল এবং দেবতারা স্বর্গের অধিকার ফিরে পেয়ে আনন্দধ্বনি করতে লাগলেন। অন্য তথ্য  থেকে জানা যায়, আশ্বিন মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশী তিথিতে দেবী কাত্যায়নী আবির্ভূতা হয়েছিলেন; শুক্লা সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী তিথিতে কাত্যায়নী  দেবীকে দেবতারা  পূজা করেন এবং দশমীতে দেবী মহিষাসুর বধ করেন। মহর্ষি মেধার কাছে দেবী মহামায়ার কাহিনী  শুনে রাজা  সুরথ ও সমাধি মা মহামায়াকে প্রসন্ন করার জন্য  কঠিন তপস্যা করলেন ও তাঁর পূজা  করলেন এবং শেষে মহামায়া মা দুর্গা তাদের দেখা দিয়ে সুরথকে হারানো রাজ্য ফিরিয়ে দিলেন এবং সমাধি বণিককে তত্ত্বজ্ঞান দিলেন। 

এই দুর্গোৎসব স্মরণ করেই আমাদেরও শারদীয়া দুর্গাপূজা
দেবী দুর্গার বিভিন্ন রূপ
দেবী দুর্গা পরব্রহ্ম শ্রীকৃষ্ণের যোগমায়া শক্তি, যিনি হরি সহায়িনী তথা হরিভক্তিপ্রদায়িনী। এই পৃথিবীতে এনার ৯টি  রূপ কে নবদুর্গা  বলা হয় এবং দেবীর  এই ৯টি  রূপ কে  দিনে পূজা করা হয়। 
দেবী দুর্গার ৯টি  রূপ হল ।  

১.শৈলপুত্রীঃ

মা শৈলপুত্রীর বাহন বৃষ । এঁনার দক্ষিণ হস্তে ত্রিশূল আর বাম হস্তে কমল আছে । শৈলরাজ হিমালয়ের কন্যা হবার জন্য দেবীর এক নাম শৈলপুত্রী । নবরাত্রির প্রথম দিনে মা শৈলপুত্রীর আরাধনা করা হয় ।

২.ব্রহ্মচারিণীঃ

মা দুর্গার নবশক্তির দ্বিতীয় রূপ ব্রহ্মচারিণী। এখানে ‘ব্রহ্ম’ শব্দের অর্থ হল তপস্যা। ব্রহ্মচারিণী অর্থাৎ তপশ্চারিণী/তপ আচরণকারী।  দেবী ব্রহ্মচারিণীর রূপ- জ্যোতিতে পূর্ণ, অতি মহিমামণ্ডিত। তিনি ডান হাতে জপের মালা এবং বাঁ হাতে কমণ্ডলু ধারণ করে আছেন।

৩.চন্দ্রঘণ্টাঃ

দেবীর এই স্বরূপ পরম কল্যাণকারী । দেবীর মস্তকের  উপর ঘন্টার মতো অর্ধ চন্দ্র  বিদ্যমান তাই দেবীকে  চন্দ্র ঘন্টা নামে  অভিহিত করা হয়  এবং 
দেবী ঘণ্টার ন্যায় প্রচন্ড চন্ড(উগ্র) ধবনিতে দুরাচারী রাক্ষস , দানব , দৈত্য দের প্রকম্পিত করেন ।  এঁনার শরীরের রং স্বর্ণের মতো উজ্জ্বল ।  এঁনার হাতে কমণ্ডলু , তরোয়াল , গদা , ত্রিশূল , ধনুর্বাণ , পদ্ম , জপ মালা থাকে ।

৪.কুষ্মাণ্ডাঃ-

দেবী দুর্গা তাঁর চতুর্থ স্বরূপে "কুষ্মাণ্ডা" নামে পরিচিতা। নবরাত্রের চতুর্থদিনে, অর্থাৎ চতুর্থী তিথিতে মাতৃপ্রাণ ভক্তগণ এই কুষ্মাণ্ডারূপেই আদ্যাশক্তিকে আহ্বান করে থাকেন।
কারুণ্যে ভরপুর মায়ের সৌম্যপ্রতিমা। দেবী  ত্রিনয়নী ও অষ্টভুজা। আটটি হাতে সুদর্শনচক্র, ধনুর্বাণ, রক্তপদ্ম, কমণ্ডলু, ইত্যাদি দৃষ্টিগোচর হয়। মায়ের বামহস্তে একটি অমৃতপূর্ণ কলসও রয়েছে। 
এবার আসি মায়ের নাম বিশ্লেষণে। । 


৫. স্কন্দমাতা :

এই রূপে দেবী তার পুত্র কার্তিকের মাতা হিসাবে পূজিত হন। কার্তিকের আর এক নাম স্কন্দ । তাই এই রূপে দেবীর  নাম স্কন্ধমাতা 
 নবরাত্রির পঞ্চম রাতে দুর্গা পূজিত হন স্কন্দমাতা রূপে  ত্রিনয়নী দেবী চার হাতবিশিষ্টা , ডানদিকের উপরের হাতে ধরে আছেন শিশু কার্তিককে ,প্রস্ফুটিত পদ্ম থাকে আর এক দক্ষিণ হস্তে  বাঁ দিকের একটি হাত বরাভয় দিচ্ছে  আর এক হাতে ধরে আছেন পদ্ম । 
দেবী স্কন্দ মাতার আরাধনা 
সিংহাসনগতা নিত্য়ং পদ্মাশ্রিতকরদ্বয়া 
শুভদাস্তু সদা দেবী স্কন্দমাতা যশস্বিনী 

৬. কাত্যায়নী :

এই নাম এবং রূপের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক পৌরাণিক কাহিনি , বৈদিক যুগে কাত্যায়ন নামে এক ঋষি ছিলেন এক পুত্রের পিতা কাত্যায়নের ইচ্ছে হয় একটি কন্যসন্তান লাভের  দেবী দুর্গার তপস্যা করে তিনি অভীষ্ট পূর্ণ করেন   
কাত্যায়নের আশ্রমে আবির্ভূত হওয়ায় এই দেবী কাত্যায়নী নামে অভিহিতা হলেন। নবরাত্রির ষষ্ঠ দিনে আরাধিতা হন ভক্তদের কাছে 

৭ . কালরাত্রি :

এখানে দেবী কৃষ্ণবর্ণা ,আলুলায়িত কেশে তিনি শত্রুর
 দিকে ধাবিত ,তাঁর কণ্ঠে বিদ্যুতের মল্লিকা  ত্রিনয়নী দেবীর শ্বাস প্রশ্বাসে বেরিয়ে আসে আগুনের হলকা , ভীষণ দর্শনা দেবীর তিন হাতে অস্ত্র  এক হাতে ভক্তদের প্রতি বরাভয়  এই রূপই উপাসিত হয় কালিকা রূপে  তবে এই রূপেও দেবী ভক্তের শুভ করেন ,তাই অন্যদিকে তিনি শুভঙ্করী  দেবীর বাহন গর্দভ , ভক্তরা তাঁর পুজো করেন নবরাত্রির সপ্তম রাতে 

৮.মহা গৌরী :

হিমা
য় কন্যা নাকি ছিলেন কৃষ্ণা  কিন্তু মানস সরোবরে স্নান করার পর ,  তিনি হয়ে ওঠেন ফর্সা  তাঁর এই রূপের নাম হয় মহাগৌরী  প্রচলিত বিশ্বাস, নবরাত্রির অষ্টম রাতে তাঁর পুজো করলে সব পাপ ধুয়ে যায়  সাদা পোশাক পরিহিতা, চার হাত বিশিষ্টা

৯. সিদ্ধিদাত্রী :

নবদুর্গার নবম তথা শেষ রূপ হল সিদ্ধিদাত্রী 
। দেবী চার হাতবিশিষ্টা । তিনি সিদ্ধি দান করেন  অর্থাত্ তাঁর উপাসনায় সংসারে আসে সুখ এবং সমৃদ্ধি  সবাইকে বরাভয় দেন এই মাতৃকামূর্তি  দেবী ভগবত্ পুরাণে আছে, স্বয়ং মহাদেব দেবী দুর্গাকে সিদ্ধিদাত্রী রূপে পুজো করেছিলেন  এবং তার ফলে মহাদেব সকল সিদ্ধি লাভ করেন

দুর্গাপূজা প্রথম কোথায় শুরু হয়েছিল ?
দূর্গা পূজা কবে, কখন, কোথায় প্রথম শুরু হয়েছিল--তা নিয়ে নানা মতভেদ আছে । তবে  ওড়িশার জাজপুর ক্ষেত্র টি কে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ক্ষেত্র বলা হয় ,পৃথিবীর সৃষ্টির শুরুতে  এই জাজপুর ক্ষেত্র  থেকেই অস্থির পৃথিবীকে স্থিরতা  প্রদান করা হয়। এই জাজপুরের অধিষ্টাত্রী দেবী হলেন মা বিরজা (গিরিজা ),এই বিরজাই  (গিরিজা ) হলেন মা যোগমায়া  বা মা দূর্গা। তাই বেশির ভাগ সনাতন ধর্মালম্বীদের  মতে পৃথিবীর প্রথম দুর্গাপূজা এই জাজপুর ক্ষেত্রতেই  হয়েছিল। ওড়িষ্যা সরকারি ওয়েবসাইট অনুসারে  ''*মার্কেন্ডেয়  পুরান মতে,(Kalingan Chedi or Cheti or Chaitra Dynasty) চেদী রাজবংশের রাজা সুরথ (Suratha) খ্রীষ্ঠের জন্মের ৩০০ বছর আগে কলিঙ্গে (বর্তমানে-ওড়িশা/উড়িষ্যা ) দুর্গাপূজা শুরু করেন''।এটি সম্ভবত কলিযুগের প্রথম দূর্গা পূজা। 
মা বিরজা (গিরিজা )-জাজপুর




পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের দুর্গাপূজা
দুর্গাপূজা পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের মধ্যে অবস্থিত বিমলা মন্দিরের প্রধান উৎসব। প্রতি বছর আশ্বিন (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর) মাসে বিমলা মন্দিরে  দুর্গাপূজা উদ্‌যাপিত হয়। দুর্গাপূজার শেষ দিন, অর্থাৎ বিজয়াদশমীতে পুরীর গজপতি-বংশীয় রাজা মা বিমলাকে মহিষাসুরমর্দিনী দুর্গা রূপে পূজা করেন। নতুন দিল্লি মিউজিয়ামে রাখা কোণার্ক থেকে পাওয়া শিলালেখ-এ এই পূজার প্রাচীনত্বের  উল্লেখ পাওয়া যায়। এই শিলালেখের তথ্য অনুসারে, রাজা প্রথম নরসিংহদেব (রাজত্বকাল: ১২৩৮–১২৬৪ খ্রিস্টাব্দ ) বিজয়াদশমীর দিন দুর্গা-মাধব (বিমলা-জগন্নাথ) পূজা করেছিলেন। দেবী বিমলাকে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে কাত্যায়নী, দুর্গা, ভৈরবী, ভুবনেশ্বরী বা একানংশা দেবী বলে উল্লেখ করা হয়েছে
 বিমলার ভোগ নিবেদন
সাধারণত দেবী বিমলার জন্য আলাদা ভোগ রান্না করা হয় না।  জগন্নাথ মন্দিরে নিবেদিত নিরামিশ ভোগই মা বিমলাকে নিবেদন করা হয়। জগন্নাথের প্রসাদ মা বিমলাকে নিবেদন করার পরই তা মহাপ্রসাদের মর্যাদা পায়। ভোগে নারকেল বাটা, চিজ ও মাখন সহ শুকনো ভাত দেওয়া হয়।
মা বিমলা

 
বাংলার  বাঙালির দুর্গাপূজা




দুর্গাপূজা সমগ্র হিন্দুসমাজেই প্রচলিত। তবে বঙ্গজীবনের শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজা শুরু থেকে শেষ হয় দেবী দুর্গার বাপের বাড়ি আগমন থেকে স্বামীগৃহে গমন পর্যন্ত। বাঙালি হিন্দু সমাজে  মা দূর্গা কে কন্যা রূপে বরণ  করা  হয়। বাঙালি হিন্দু সমাজের  প্রত্যেকেই  মনে করেন,  মা  দূর্গা যেন তাদের বাড়ির মেয়ে তিনি যেন তাঁদের বাড়িতেই  আসছেন । তাই  হিন্দু বাঙালিদের সবাই  তাদের ঘর ,বাড়ী  মা দুর্গার আগমনের পূর্বেই  সাজিয়ে তুলেন। 

মা দুর্গার বাপের বাড়িতে থাকার সময় এই  চার দিন  মহা আনন্দের ,এই চার দিন হিন্দু বাঙালিরা কখনো বা মা রূপে কখনো বা কন্যা রূপে মা দুর্গার  পূজা করেন। দেবী  দুর্গার সাথে হিন্দু বাঙালিদের যে ভক্তি ,প্রেম ,ভালোবাসা তা এককথায় তা অবর্ণনীয়। 



আজকাল  শারদীয়া দুর্গাপূজা ভারত, বাংলাদেশ ও নেপাল সহ ভারতীয় উপমহাদেশ ও বিশ্বের একাধিক রাষ্ট্রে পালিত হয়ে থাকে।  তবে বাঙালি হিন্দু সমাজের প্রধান ধর্মীয় উৎসব হওয়ার দরুন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও ঝাড়খণ্ড রাজ্যে ও বাংলাদেশে শারদীয়া দুর্গাপূজা বিশেষ জাঁকজমকের সঙ্গে পালিত হয়।। ভারতের অন্যান্য রাজ্যে প্রবাসী বাঙালি ও স্থানীয় জনসাধারণ নিজ নিজ প্রথামাফিক শারদীয়া দুর্গাপূজা ও নবরাত্রি উৎসব পালন করে। এমনকি পাশ্চাত্য দেশগুলিতে কর্মসূত্রে বসবাসরত বাঙালিরাও দুর্গাপূজা পালন করে থাকেন।


नाहं ज्ञानी न च विद्वान् ।
मम सर्वं श्रीजगन्नाथस्य दानम्॥

লেখক পরিচিতি:- প্রবীর  ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের  উৎকল ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।  প্রবীরের  বইগুলি Amazon.com. flipkart.com, abebooks.com এর মাধ্যমে বিক্রি হয়। গুগল ও অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন থেকে সার্চ করে এখনো পর্যন্ত ১২ লাখের বেশি লোক  প্রবীরের লেখা আর্টিকেল গুলি পড়েছেন।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আরতি কি ? আরতি কি ভাবে করবেন ? সন্ধ্যা দেওয়ার নিয়ম কি ? পড়ুন এবং দেখুন ।

ভীম একাদশী ও দক্ষিণ বঙ্গের ভৈম-একাদশীর ব্রত পালন।

আত্মা ও মৃত্যু। মৃত্যুর পরে কি হয় ও আত্মার শান্তির জন্য কি করতে হয় ? আত্মার সাথে কি ভাবে যোগাযোগ করবেন ? পুনর্জন্মের বৃত্তান্ত -আত্মা ও গর্ভাধান ,পূর্বজন্মের কথা /বৃত্তান্ত কি ভাবে জানবেন ?