মন পরিষ্কার রাখার,ও ধ্যান করার সহজ উপায়।

 



মানুষ যখন এই পৃথিবীতে জন্ম নেয়,তখন তাদের প্রত্যেকেরই মন গঙ্গা জলের  মতো পবিত্র হয়। তাদের মন দেবশিশুর মতো হয় । তখন দেবশিশু ও মানব শিশুর মনের মধ্যে কোন পার্থক্য থাকেনা।এই মানব শিশু যখন ধীরে, ধীরে বড়ো  হতে শুরু করে ,তখন যদি তার পরিবার ,আত্মীয়,স্বজন, কুটুম্ব,বন্ধু, বান্ধব, পাড়া, প্রতিবেশী এবং সমাজের  লোক তার সেই   গঙ্গা জলের  মতো পবিত্র মনে কাম-ক্রোধ-লোভ-অন্ধ মোহ,অহংকার,ঈর্ষা,  হিংসা,ঘৃণা নামক নোংরা/আবর্জনা ঢুকিয়ে দেয়, তখন সেই মানব শিশুর  গঙ্গা জলের  মতো পবিত্র মন নর্দমা তে পরিণত হয়। যার ফলে জন্মজাত দেব শিশু হয়ে উঠে দৈত্য ,দানব, মানুষ হয়ে উঠে  অমানুষ । 

তাই  আপনার  নিজের ও আপনার  ছেলেমেয়েদের  গঙ্গা জলের  মতো পবিত্র  মনে  অন্য কাউকে নোংরা/আবর্জনা ঢোকাতে  দিবেন না  এবং তাদের খারাপ মানুষদের কাছ থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন। এছাড়া নিজের ও আপনার  ছেলেমেয়েদের  মনকে সর্বদাই পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন। মন অপরিষ্কার হলেই মাথায় মধ্যে উল্টোপাল্টা চিন্তা বাসা বাঁধতে শুরু করে।
অপরিষ্কার-মন।
আমাদের মন একটা প্যারাসুটের মতো, খোলা থাকলেই ভালো কাজ করে।’ আমরা সবাই খোলা মন নিয়ে জন্ম নিই। পারিবারিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পারিপার্শ্বিক কারণে ধীরে ধীরে আমাদের মন পক্ষপাতমূলক ধারণায় বন্দী হতে থাকে। মন অপরিষ্কার হতে থাকে।মন অপরিষ্কার হলেই মানুষ খারাপ হয়ে যায় ,মানুষ যখন খারাপ হয়ে যায় তখন সে সংক্রামক রোগীর মতো হয়ে যায় ,সে চারিদিকে তার সংক্রমণ ছড়াতে  শুরু করে। তাই মানুষ কে মাঝে মাঝে মনের ময়লা পরিষ্কার  করতে হয়। 
মনের ময়লা দূর/পরিষ্কার করার উপায়। 
মনের ময়লা পরিষ্কার করার সহজ উপায় হলো মাথায় মধ্যে উল্টোপাল্টা চিন্তা কে না  আসতে  দেওয়া।কথায় বলে:- 
কাজের চিন্তা  চলে এলে,
ফালতু চিন্তা যাবেন ভুলে।
 তাই মাথায় মধ্যে উল্টোপাল্টা ফালতু চিন্তা কে না  আসতে  দেওয়ার জন্য নিজেকে সবসময় বিভিন্ন প্রোডাক্টিভ কাজে ব্যস্ত রাখুন। তাহলে দেখবেন মাথায় আর উল্টোপাল্টা চিন্তা কম আসছে এবং মন  ধীরে ধীরে পরিষ্কার হচ্ছে। 
মন পরিষ্কার রাখার  উপায়
আমাদের মন এবং চোখের  মধ্যে খুব সুন্দর তালমেল  আছে তাই মানুষ  যখন যেমন ভাবে ,তখন তেমন দেখে। যেমন শিব লিঙ্গ কে যদি কেউ পাথর ভাবে ,তাহলে তার চোখে  এটি পাথর ,আর যদি কেউ শিব লিঙ্গ ভাবে তার চোখে শিব লিঙ্গ সাক্ষাৎ মহাদেব। তাই নিজের সৎ,সুন্দর,উজ্জ্বল ভাবনা কে নিজের কাছে রাখুন, অন্যের দূষিত ,কুৎসিত ,উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবনা ,আচার বিচার,সংস্কার,কথন ,মনন কে না বুঝে নিজের মাথায় ঢোকাবেন না। এছাড়া প্রত্যেকদিন ঘরে ভগবানের পূজা ও সন্ধ্যা আরতি করুন ,অন্যের কথা ও কাহিনী না শুনে ভগবানের কথা ও কাহিনী শুনুন এবং ওঁ মন্ত্রোচ্চারণে ভগবানের ধ্যান করুনআপনার মন পরিষ্কার থাকতে বাধ্য। 

মিনিমালিজম  কে অঙ্গের অঙ্গি ও সঙ্গের সঙ্গী করুন। আমাদের একটি প্রাচীন প্রবাদ প্রবচনে বলা হয়েছে :- 
সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে-
অর্থাৎ লোহা ওজনে খুব ভারী বলে তা জলে  ডুবে যায়, কিন্তু এই  ভারী লোহা যদি হালকা কাঠ  অথবা অন্য কোনো হালকা  পদার্থের সঙ্গে বেঁধে দেওয়া যায়, তাহলে লোহা ভেসে ওঠে, ডুবে না। মানুষের মধ্যেও অসৎ সঙ্গের সহচর্যের প্রভাব এভাবেই কার্যকরী হয়। সঙ্গদোষে মানুষও ভেসে ওঠে সে তার আসল চরিত্র হারিয়ে ফেলে। তাই সঙ্গ ও সঙ্গী (বন্ধু,সাথী ,সহচর) নির্বাচনে আমাদের সতর্ক হতে হয়। আমাদের সমাজে নানা রকম মানুষের সমাবেশ রয়েছে - জ্ঞানী-মূর্খ, ভাল-মন্দ, সৎ-অসৎ ,তাই  এদের মধ্যে ভালো মানুষদের সাথে মেলামেশা (সঙ্গত) রাখুন । ভগবানের উপর বিশ্বাস রাখুন এবং পারলে তীর্থ যাত্রা /ভ্ৰমণ  করুন। এতে মন পরিষ্কার থাকবে, জীবন ঐশ্বর্যমণ্ডিত হবে ,সমাজে শ্রদ্ধা ও সম্মানের পাত্র হিসেবে আদৃত হবেন।

 সবাই ভালো থাকুন ,সুস্থ থাকুন। সমগ্র মানব জাতি ও জীব জন্তুর  কল্যাণ হোক। শান্তির জয় হোক,সত্যের জয় হোক,মানবতার জয় হোক ,সনাতন ধর্মের জয়  হোক। 🙏হে প্রভু আমাকে শুধু জ্ঞান দাও, ভক্তি দাও আর শক্তি দাও🙏

1.পড়ুন ও অন্যকে পড়ান> শ্রী হরি নারায়ণের বাণী ও বিবরণ এবং অতি সংক্ষেপে নারায়ণের পূজা।

2.পড়ুন >>আরতি কি ? আরতি কি ভাবে করবেন ? সন্ধ্যা দেওয়ার নিয়ম কি ?

3.পড়ুন >ঈশ্বর/ভগবান কি সত্যিই আছেন? ঈশ্বর/ভগবান যদি আছেন তাহলে তার কোন প্রমাণ/যুক্তি আছে কি ?

4.পড়ুন >> বেদ এবং বিষ্ণু পুরাণ অনুযায়ী সৃস্টির রচনা।

5. পড়ুন >> বেদ এবং পুরাণের সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও ইতিহাস।

6.পড়ুন >>অযোধ্যার এক রাজকন্যা কিভাবে দক্ষিণ কোরিয়ার মহারানী হয়েছিলেন ।

7.পড়ুন >>মানুষ চেনার সহজ উপায়।

8.পড়ুন>>আত্মা ও মৃত্যু। মৃত্যুর পরে কি হয় ? মৃত ব্যক্তির আত্মার শান্তির জন্য কি করতে হয় ? পুনর্জন্মের বৃত্তান্ত -আত্মা ও গর্ভাধান ,পূর্বজন্মের বৃত্তান্ত কি ভাবে জানবেন ?

9.পড়ুন>>ষড়রিপু এবং মানব জীবনে ষড়রিপুর প্রভাব:ষড়রিপু কে নিয়ন্ত্রণ বা দমন করার উপায়।

আমি এই আর্টিকেল টি আমার এক মাত্র
 ছেলে ৺ >আকাশের< জন্য উৎসর্গ করিলাম।

 


লেখক পরিচিতি:-প্রবীর মহান্তী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের  উৎকল ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।  প্রবীরের  বইগুলি Amazon.com. flipkart.com, abebooks.com এর মাধ্যমে বিক্রি হয়। গুগল ও অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন থেকে সার্চ করে এখনো পর্যন্ত ১২ লাখের বেশি লোক  প্রবীরের লেখা আর্টিকেল গুলি পড়েছেন।
Comment of Author:-This article has been penned under the divine inspiration of Lord Jagannath. If anybody or any organization doesn't agree with any content of this article, he or they may mention it in the comments with documentary evidence and it will be corrected. Any comments in this regard without documentary evidence and source of Information will be treated as mala fide and will be deleted.

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সত্য,ত্রেতা,দ্বাপর,কলি এই চার যুগের সময়,পরিমাণ,বৈশিষ্ট্যসমূহ ও অবতার এবং যুগ পরিবর্তন ও কল্কি অবতার।

ষড়রিপু এবং মানব জীবনে ষড়রিপুর প্রভাব:ষড়রিপু কে নিয়ন্ত্রণ বা দমন করার উপায়।

আরতি কি ? আরতি কি ভাবে করবেন ? সন্ধ্যা দেওয়ার নিয়ম কি ? পড়ুন এবং দেখুন ।