অযোধ্যার এক রাজকন্যা কিভাবে দক্ষিণ কোরিয়ার মহারানী হয়েছিলেন ।

অযোধ্যার  রাজকন্যা সূর্য রত্না (সুরিরত্না)বিয়ের পরে -দক্ষিণ কোরিয়ার রানী   হিও ।

 
দক্ষিণ কোরিয়া উত্তর-পূর্ব এশিয়ার একটি দেশ যা কোরীয় উপদ্বীপের দক্ষিণ অংশটি নিয়ে গঠিত। এর সরকারি নাম কোরীয় প্রজাতন্ত্র (কোরীয়: 대한민국 দাএ-হান্-মিন্-‌গুক্‌)।

দক্ষিণ কোরিয়ার উত্তরে, উত্তর কোরিয়া, পূর্বে জাপান সাগর, দক্ষিণে ও দক্ষিণ-পূর্বে কোরিয়া প্রণালী, যা জাপান থেকে দেশটিকে পৃথক করেছে, এবং পশ্চিমে পীত সাগর। সিউল হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার বৃহত্তম শহর ও রাজধানী। এই এই সুন্দর দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে  ভারতের এক পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে।

 দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে  ভারতের এক পারিবারিক সম্পর্ক।

দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে  ভারতের এই পারিবারিক সম্পর্কের কারণ অযোধ্যা নগরীর  রাজকন্যা সূর্য রত্না(সুরিরত্না)।

 পড়ুন >> তথ্য অনুসন্ধান অনুসারে ,৩৩ খ্রিষ্টাব্দে ভারতবর্ষের অযোধ্যা নগরীতে রাজকন্যা সূর্য রত্নার(সুরিরত্না) জন্ম হয় । কিংবদন্তি অনুসারে অযোধ্যার  রাজকন্যা সুরিরত্নার  পিতা মাতা  স্বপ্নে  দেখেছিলেন  তার মেয়ে সূর্যরত্নার  দক্ষিণ কোরিয়ার( Geumgwan Gaya  also known as Bon-Gaya (본가야, 本伽倻, "original Gaya") রাজা সুরোর সাথে বিবাহ হবে  এবং সুরিরত্না  সেখানকার মহারানী হবেন । শুধু তাই নয়  ভগবান স্বপ্নে সুরিরত্নার পিতামাতা  কে আদেশ দিয়েছিলেন,  তাঁদের  মেয়ে সুরিরত্না  বিবাহ যোগ্য হলে, উপযুক্ত সময়ে  গয়ের (দক্ষিণ কোরিয়ার) রাজা সুরোর কাছে বিবাহের জন্যে পাঠাতে । স্বপ্নে  ভগবানের কাছে আদেশ পাওয়ার পরে, সুরিরত্না বিবাহ যোগ্য হলে, উপযুক্ত সময়ে অযোধ্যার  রাজা তার ১৬ বছরের পরমা সুন্দরী মেয়ে কে সামুদ্রিক জাহাজে করে তার সাথে ২০ জন রক্ষক,দাস, দাসী কে সঙ্গে দিয়ে রাজা সুরোর সাথে বিবাহের জন্যে পাঠান। কয়েক মাস সমুদ্র যাত্রার পর  রাজকন্যা সূর্যরত্না (সুরিরত্না) রাজা সুরোর  রাজ্যে  পৌঁছান ।                                    


সুরোর সাথে বিয়ে। 
সূর্য রত্নার(সুরিরত্না) ,সুরোর কাছে পৌঁছানোর পর তাঁর রাজা সুরোর সাথে বিবাহ  হয় । সুরোর সাথে  বিয়ের পরে,তার নতুন নাম হয় হিও ওয়াং-ওকে ,সংক্ষেপে বলা হয়  হো বা  হিও। হিও বিয়ের সময়  রাজা সুরোকে বলেছিলেন , তিনি কীভাবে রাজা সুরোর কাছে  এসেছিলেন । সেই সময় রাজা সুরো তাকে বলেছিলেন যে, তিনিও স্বপ্নে  ভগবানের কাছ থেকে  হিওয়ের (সুরিরত্না) আগমনের বিষয়ে আগাম জানতেন এবং সেইজন্য  প্রিন্সেস হিও এবং জাহাজের  অন্য যাত্রীদের রাজ প্রাসাদে নিয়ে যাওয়ার জন্য একজন বিশ্বস্ত অফিসার ইউচান-গানকে  ঘোড়া,গাড়ী,লোক লস্কর এবং একটি নৌকা নিয়ে তার রাজ্যের রাজধানীর দক্ষিণে অবস্থিত একটি দ্বীপ মঙ্গসান-ডুতে পাঠিয়ে ছিলেন । এছাড়া  তিনি তাঁর দরবারীদের দ্বারা প্রস্তাবিত সুন্দরী কন্যাদের বিয়ে করেননি। কিংবদন্তি অনুসারে, রাজা সুরোর দরবারীরা তাঁকে অনুরোধ করেছিলেন যে তারা রাজা সুরোর জন্য অনেক  সুন্দরী কন্যা নিয়ে এসেছেন, রাজা সুরো তাদের মধ্য থেকে একজনকে স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করুন । সুরো  তখন বলেছিলেন যে তার স্ত্রী নির্বাচনের নির্দেশ স্বর্গের দ্বারা দেওয়া হবে।

হিও এবং সুরোর 12 টি সন্তান ছিল, বড় ছেলের নাম ছিল জিওডাং।  জনশ্রুতিতে বলা হয়েছে যে রানী সূর্য রত্না (সুরিরত্না) 157 বছর বয়সে মারা গিয়েছিলেন। আজ সামগ্রিকভাবে, ছয় মিলিয়নেরও বেশি কোরিয়ানরা তাদের কুইন হিওর বংশধর । এই কারণে রামের অযোধ্যাই  ৭০ লক্ষ দক্ষিণ কোরিয়ানদের মামার বাড়ি বা তাদের “মাতৃগৃহ”। 

অযোধ্যায় স্মৃতিসৌধ
অযোধ্যায়  2001 সালে,দক্ষিণ কোরিয়া দ্বারা তাদের  কিংবদন্তি রানী হিও র স্মৃতির উদ্দেশ্যেএকটি স্মৃতিসৌধ তৈরি করা হয়।  দীপাবলি উদযাপনের প্রাক্কালে 6 নভেম্বর 2018 এ, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম মহিলা কিম জং-সুক অযোধ্যায় বিদ্যমান স্মৃতিসৌধের সম্প্রসারণ ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। তিনি কুইন হিও র স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ,এছাড়া স্মৃতিসৌধের  সৌন্দর্যমণ্ডিত করণ ও  দৃষ্টিনন্দন করার জন্য  অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন। আজও  প্রতি বছর শত শত দক্ষিণ কোরিয়ান নাগরিক  রামের জন্মস্থান অযোধ্যাতে যান, তাঁদের কিংবদন্তি রানী হিও কে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। সবাই ভালো থাকুন ,সুস্থ থাকুন। সমগ্র মানব জাতি ও জীব জন্তুর  কল্যাণ হোক। শান্তির জয় হোক,সত্যের জয় হোক,মানবতার জয় হোক ,সনাতন ধর্মের জয়  হোক। 🙏

দেখুন: অযোধ্যা নগরীর  রাজকন্যা  এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মহারানীর দেশ । আজকের  দক্ষিণ কোরিয়া।












  লেখক পরিচিতি:- প্রবীর  ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের  উৎকল ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।  প্রবীরের  বইগুলি Amazon.com. flipkart.com, abebooks.com এর মাধ্যমে বিক্রি হয়। গুগল ও অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন থেকে সার্চ করে এখনো পর্যন্ত ১২ লাখের বেশি লোক  প্রবীরের লেখা আর্টিকেল গুলি পড়েছেন।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আরতি কি ? আরতি কি ভাবে করবেন ? সন্ধ্যা দেওয়ার নিয়ম কি ? পড়ুন এবং দেখুন ।

শ্রী শ্রী মা ষষ্ঠীদেবীর পূজা এবং তাঁর ধ্যান মন্ত্র,প্রণাম মন্ত্র ও ব্রত পালন ।

কলি যুগের অবসান/সমাপ্তি ও কল্কি অবতার - সত্য যুগের পুনঃপ্রতিষ্ঠা- সত্য,ত্রেতা,দ্বাপর,কলি এই চার যুগের সময়,পরিমাণ,বৈশিষ্ট্যসমূহ ও অবতার এবং যুগ পরিবর্তন ।