পরমেশ্বর- শ্রী হরি নারায়ণের /মহা বিষ্ণুর বাণী ও বিবরণ এবং অতি সংক্ষেপে নারায়ণের পূজা।
হে প্রভু ,হে শ্রী হরি, হে নারায়ণ ,আপনিই অনন্ত ,আপনিই এই সৃষ্টির স্রষ্টা এবং আপনি ই আদি এবং আপনিই অন্ত। এই লেখাটিতে আপনার কথা বর্ণনা করিলাম,ভুল ত্রুটি মার্জনা করিবেন। আপনার শ্রী চরণে অনন্ত কোটি বার প্রণাম। 🙏
শ্রী মহা বিষ্ণুর ষোড়শ (১৬) নাম স্তোত্রম।
শ্রীহরি নারায়ণ।
সনাতন ধর্মের সবচেয়ে প্রাচীন গ্রন্থ বেদে হরি মানে -পরম পুরুষ । ঋগ্বেদের পুরুষ সূক্তে (পরম মহাজাগতিক সত্তার প্রশংসা) পুরুষ (ব্রহ্ম) হলেন পরম ঐশ্বরিক সত্ত্বার প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নাম।
যজুর্বেদের নারায়ণ সূক্ত অনুযায়ী পরম সত্তার দ্বিতীয় ও বিকল্প নাম -নারায়ণ। ইনিই হলেন ঈশ্বরগণেরও ঈশ্বর- পরমেশ্বর। তাঁর অপর নাম গুলি হল পরমাত্মা,পরব্রহ্ম,সত্য বিষ্ণু,সত্য নারায়ণ ইত্যাদি। ইনিই হলেন অবিনাশী সত্ত্বা , কেবল ইনিই ত্রিগুণাতীত অর্থাৎ তিনি সত্ত্ব ,রজঃ ,তমঃ এই তিন গুণের প্রভাব বা মায়ার বন্ধন থেকে মুক্ত। সৃষ্টিতত্ত্ব/সৃষ্টিচক্রর বর্ণনা অনুযায়ী সৃষ্টির আদিতে পরম পুরুষকে নিত্য সত্ত্বা হিসেবে দেখা হয়। এই নিত্য সত্ত্বার কোনো সৃষ্টি বা ধ্বংস হয় না। নিত্য সত্ত্বার দ্বারা সৃষ্ট বিশ্বব্রহ্মান্ডের মধ্যে বিদ্যমান সবকিছুর মধ্যে সত্ত্ব , রজঃ ও তমঃ এই তিন টি গুণ বিদ্যমান। এক মাত্র পরম পুরুষ হলেন ত্রিগুণাতীত অর্থাৎ সত্ত্ব রজঃ তমঃ এই তিন গুণের প্রভাব বা মায়ার বন্ধন থেকে মুক্ত। এই পরমেশ্বর ভগবান শ্রী হরি বিষ্ণু, কৃষ্ণ অবতার রুপে ধরাধামে অবতীর্ণ হয়েছিলেন অধর্মের বিনাশ ঘটিয়ে ধর্মের সংস্থাপন করতে। গীতায় সে কথার উল্লেখ পাওয়া যায়।
গীতা
ভগবদ্গীতা বা শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা বা গীতা একটি ৭০০-শ্লোকের ধর্মগ্রন্থ। এতে ১৮ টি অধ্যায় এবং সাতশত শ্লোক আছে। সাতশত শ্লোক থাকার জন্য এঁকে সপ্তশতী ও বলা হয় । এটি প্রাচীন সংস্কৃত মহাকাব্য মহাভারতের ভীষ্ম পর্বের একটি অংশ। গীতা- ভগবানের মুখনিঃসৃত বাণী ,তাই এটি বেদের সমতুল্য এবং এটি কে পঞ্চম বেদ বলা হয় । গীতা একটি স্বতন্ত্র ধর্মগ্রন্থ তথা একটি পৃথক শাস্ত্র এর মর্যাদা পেয়ে থাকে।
প্রভুর বিশ্বরূপ ("বৈশ্বিক আকার"-"সর্ব-রূপ") |
গীতায় শ্রীকৃষ্ণ ভগবান বলেছেন;-
যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত;
অভ্যুত্থানমধর্মস্য, তদাত্মানং সৃজাম্যহম্।।
পরিত্রাণায় সাধুনাং, বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্,
ধর্ম সংস্থাপনায় সম্ভবামি যুগে যুগে!!
যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত;
অভ্যুত্থানমধর্মস্য, তদাত্মানং সৃজাম্যহম্।।
পরিত্রাণায় সাধুনাং, বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্,
ধর্ম সংস্থাপনায় সম্ভবামি যুগে যুগে!!
যার বাংলা অর্থ-
যদা যদা (যখন যখন),-হি ( ইন্দ্রিয়গোচর/বাস্তব/),- ধর্মস্য (ধর্মের),- গ্লানিঃ ( গ্লানি),- ভবতি (হয়),-ভারত (হে ভরতবংশী অর্জুন),- অভ্যুত্থানম্ (অভ্যুত্থান ঘটে),- অধর্মস্য (অধর্মের),-তদা ( তখনি ), -আত্মানং ( নিজের রূপকে রচনা করি),-সৃজামি (লোকের সামনে প্রকট হই),-অহম ( আমি )॥
পরিত্রাণায় (পরিত্রাণ হেতু),-সাধুনাং (সাধুদের),- বিনাশায় (বিনাশ নিমিত্ত),- চ (এবং),- দুষ্কৃতাং (দুষ্কৃতীকারীদের),- ধর্মসংস্থাপনায় (ধর্ম সংস্থাপনের জন্য),-সম্ভবামি (অবতীর্ণ হই),- যুগে যুগে (যুগে যুগে) ॥
উপরোক্ত অর্থ হইতে একসাথে বলা যায়:-
“যখনই ধর্মের গ্লানি ইন্দ্রিয়গোচর হয়, অধর্মের অভ্যুত্থান ঘটে তখনই হে ভরতবংশী (অর্জুন), পাপীদের পরিত্রাণ এবং দুষ্কৃতীদের বিনাশ নিমিত্তে এবং ধর্মসংস্থাপন করার জন্য আমি যুগে যুগে অবতীর্ণ হই।”
পরমপুরুষের গাত্রবর্ণ ঘন মেঘের ন্যায় নীল (ঘনশ্যাম), তিনি শঙ্খ-চক্র-গদা-পদ্ম ধারী,তাঁর অনন্ত মস্তক, অনন্ত চক্ষু, অনন্ত চরণ,অনন্ত হস্ত। তিনি জগৎকে সর্বতোভাবে পরিবেষ্টন করে আছেন । তিনিই অতীত,বর্তমান
ও
ভবিষ্যত
। তিনিই দেবত্বের নিয়ন্তা । ত্রিকালের অধীনে সমস্ত জীব-জগৎ তাঁর একপাদ (এক চতুর্থাংশ) মাত্র । তাঁর অবশিষ্ট ত্রিপাদ অবিনাশী রূপে অবস্থিত রয়েছে।তাঁর একাংশেই
মায়াশক্তিতে
সৃষ্টি-পালন ও লয় ক্রিয়া ঘটে।তাঁর মায়ার দ্বারাই নানারূপ চেতন অচেতন সকল পদার্থ সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর থেকেই ব্রহ্মান্ডরূপে শরীর উৎপন্ন হয়েছে। তিনিই লোকসমুদায়ের সৃষ্টিকর্তা। তাঁর থেকে শ্রেষ্ঠতর
বা
পূজ্যতর
কেউ
নেই। তিনিই সকলের পিতা, পিতামহ ও প্রপিতামহস্বরূপ। সুখ-দুঃখের অতীত ভগবান সর্বদা সমস্ত জীবের অন্তরে অবস্থান করেন । এই জন্যই মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত্য এঁনাকেই সর্ব প্রথম এবং সর্বাধিক বার মন্ত্র উচ্চারণের দ্বারা আবাহন ও স্মরণ করা হয়।
ব্রহ্ম একাক্ষর মন্ত্র ওঁ
অতি সংক্ষেপে শ্রী হরি নারায়ণের পূজা।
শ্রী হরি নারায়ণের সবচেয়ে সংক্ষেপে পূজা করার জন্য দরকার -চোখের জল এবং জল, পারলে ফুল ও ফল। এছাড়া বলুন -ওঁ নমো নারায়ণ অথবা ওঁ নমো ভগবতে বাসুদেবায়।
নারায়ণ পূজার সাধারণ পদ্ধতি
১. পূজার স্থান প্রস্তুতি:
পূজার স্থান পরিষ্কার ও শুদ্ধ করতে হবে।
নারায়ণের মূর্তি বা ছবি পূজার স্থানে স্থাপন করুন।
পূজার স্থানে তাজা ফুল, ধূপ, প্রদীপ, এবং জল ভরা একটি পাত্র রাখুন।
পূজার স্থানটি পূর্ব বা উত্তর দিকে মুখ করে স্থাপন করা ভালো।
২. উপকরণ:
নারায়ণের মূর্তি বা ছবি
ফল, মিষ্টি, মধু, দুধ
তুলসী পাতা (বিশেষত নারায়ণের পূজায় তুলসী অত্যন্ত পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ)
ফুল (বিশেষ করে যব, চন্দন ফুল)
ধূপ, দীপ, সুগন্ধি, পঞ্চামৃত (দুধ, দই, মধু, ঘি, চিনি)
চন্দন, সিঁদুর
শঙ্খ বাজানো, ঘণ্টা বাজানোর ব্যবস্থা
৩. পূজা পদ্ধতি:
আচমন ও শুদ্ধি: প্রথমে গঙ্গাজল বা শুদ্ধ জলের মাধ্যমে নিজের হাত, মুখ ও পূজার স্থানকে শুদ্ধ করে নিন।
আহ্বান: ধূপ ও প্রদীপ জ্বালিয়ে নারায়ণকে আহ্বান করুন।
মন্ত্র উচ্চারণ করা হয়, যেমন:
"ওঁ নারায়ণায় বিদ্মহে বাসুদেবায় ধীমহি, তন্নো বিষ্ণু: প্রচোদয়াত।"
অর্ঘ্য প্রদান: নারায়ণের চরণে ফুল, ফল ও তুলসী পাতা নিবেদন করুন।
পঞ্চামৃত স্নান: নারায়ণের মূর্তি বা ছবিকে পঞ্চামৃত দিয়ে স্নান করানো হয়।
ভোগ নিবেদন: নারায়ণকে ফল, মিষ্টি, ক্ষীর বা দুধের প্রস্তুতকৃত প্রসাদ নিবেদন করা হয়।
আরতি ও প্রার্থনা: ধূপ ও দীপ দিয়ে নারায়ণের আরতি করুন এবং শঙ্খ বাজিয়ে আরতি সম্পন্ন করুন।
মন্ত্র পাঠ ও প্রার্থনা: ভগবান নারায়ণের জন্য বিশেষ মন্ত্রপাঠ করা হয়। উদাহরণ:
"ওঁ নমো নারায়ণায়।"
"শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা" বা "নারায়ণ সুক্তম" এর পাঠ।
৪. প্রণাম ও প্রসাদ গ্রহণ:
পূজার শেষে নারায়ণের প্রতি প্রণাম জানিয়ে আশীর্বাদ প্রার্থনা করতে হবে।
প্রসাদ বিতরণ করে সকলের মধ্যে তা ভাগ করে দিতে হবে।
শ্রী হরি নারায়ণের প্রচলিত পূজা পদ্ধতি ।
পূজা শুরুর আগের কিছু নিয়ম।
নারায়ণ পূজার আয়োজন খুব সহজ। যে যার সাধ্য মত আয়োজন করেন। যেকোনো পূর্ণিমার তিথিতেই এই পূজা করা যায়। অনেকে বাড়ির পরিবেশ শুদ্ধ রাখতে, প্রতিটা বড় পূর্ণিমাতেই পূজা করে থাকেন।পূজার আগের দিন শ্রী হরি নারায়ণ কে গোটা সুপারি দিয়ে নিমন্ত্রণ করুন (এটি আগের দিন সন্ধ্যা আরতির পর করলে ভালো হয়) ।
পূজার আগের নিয়ম বলতে, সবচেয়ে আগে পূজার স্থান ভালোভাবে পরিষ্কার করে রাখুন। পরিষ্কার করে যেখানে ঘট পাতবেন, সেখানে আলপনা দিয়ে দিন। সুন্দর করে ফুল দিয়ে সাজিয়ে দিন। ঘটে আমপাতা, শিষ ডাব দিন। অবশ্যই ঘটে ও ডাবে স্বস্তিক চিহ্ন এঁকে দেবেন। বিজোড় সংখ্যক আমপাতা রাখবেন। এতে সিঁদুরের ফোঁটা দেবেন। বাড়িতে নারায়নের প্রাণ প্রতিষ্ঠিত মূর্তি থাকলে ঘট্ স্থাপনের দরকার নেই। ঘটের জায়গায় নারায়নের প্রাণ প্রতিষ্ঠিত মূর্তিটি রাখুন।
এরপর নৈবেদ্য সাজিয়ে দেবেন। একটি থালায় তিনটি জায়গায় একটু করে চাল, ও তার সঙ্গে কলা, বাতাসা, অন্যান্য ফল, তার ওপর সিকি মানে কয়েন, পঞ্চ শস্য এসব দিয়ে সাজান। পঞ্চ শস্য মানে পাঁচ রকম শস্য। এই ভাবেএকটি থালায় তিনটি ও আরেকটি থালায় পাঁচটি নৈবিদ্য সাজিয়ে রাখুন।
সিন্নির জন্য একটি গামলায় ময়দা, গুড়, দুধ, খোয়া ক্ষীর, একটু নারকেল কোরা, কাজু, কিশমিশ ঠাকুরের সামনে রাখবেন। পূজার পর সিন্নি তৈরি করবেন। এছাড়াও নারায়ণের ছবির দু’পাশে দুটো পান পাতা রাখুন। এর ওপর একটা সুপারি, একটা কয়েন, একটা কলা রাখুন।
পূজা শুরু করার আগে প্রভুর বন্দনা টি শুনুন। এতে আপনার পূজাস্থলের আশপাশের বাতাবরণ প্রভুময় উঠবে। পূজার শুরুতেই তিন বার শঙ্খ বাজান।
এরপর নারায়ণের পূজা শুরু করার আগে শ্রীগণেশের মন্ত্র বলুন।
ওঁ গং গনপতেয় নমঃ
ওঁ গং গনপতেয় সর্ব কার্য সিদ্ধি কুরু কুরু স্বাহা।
এর পর শ্রী হরি নারায়ণের ধ্যান করুন এবং শ্রী হরি নারায়ণ কে আবাহন করুন।
শ্রী হরি নারায়ণ কে আসনে/বেদীতে বসান।
শ্রী হরি নারায়ণের পা ধোয়ান ও তার পরে পা মোছান। শ্রী হরি নারায়ণ কে শুদ্ধ জল দিয়ে স্নান করান।
শ্রীহরি নারায়নের স্নান।
স্নানের মন্ত্র টি শুনতে ও পাঠ করতে প্রভু কে স্নান করাইবেন।
স্নানান্তে ‘ওঁ নমস্তে বহুরূপায় বিষ্ণবে পরমাত্মনে স্বাহা’ মন্ত্রে দুইটি তুলসীপত্র শ্রী হরিনারায়ণের উপরে ও নীচে দিবেন।
শ্রী হরি নারায়ণ কে মালা পরান ,কপালে চন্দন লাগান ।
শ্রী হরি নারায়ণ কে সুগন্ধি পদার্থ- ধূপ,দীপ ,ইত্যাদি অর্পণ করুন।
শ্রী হরি নারায়ণ কে নৈবেদ্য অর্পণ করুন ।
এর পর শ্রী হরি নারায়ণের পূজা।
পূজার মন্ত্র
জল নিয়ে ও হাতে ফুল নিয়ে নিম্নোক্ত মন্ত্রে পূজা করতে হবে ।
এত্দ পাদ্যং ওঁ তদবিষ্ণো পরমং পদং সদা পশ্যান্তি সুরয়ঃ দিবীব চক্ষুরাততম ,ওঁ নমো নারায়ণায় শ্রী বিষ্ণুবে নমঃ বলে কুশির জল ও হাতের ফুল সামনের ঘটে বা বিগ্রহের চরণে দিতে হবে ।এভাবে ইদ্ম অর্ঘ্যং ওঁ তদবিষ্ণো পরমং পদং সদা পশ্যান্তি সুরয়ঃ দিবীব চক্ষুরাততম , ওঁ নমো নারায়ণায় শ্রী বিষ্ণুবে নমঃ ,ইদ্ম আচমনীয়োদকং ওঁ তদবিষ্ণো পরমং পদং সদা পশ্যান্তি সুরয়ঃ দিবীব চক্ষুরাততম , ওঁ নমো নারায়ণায় শ্রী বিষ্ণুবে নমঃ,ইদ্ম স্নানীয়োদকং ওঁ তদবিষ্ণো পরমং পদং সদা পশ্যান্তি সুরয়ঃ দিবীব চক্ষুরাততম , ওঁ নমো নারায়ণায় শ্রী বিষ্ণুবে নমঃ তুলশীপাতায় চন্দন মেখে এত্ৎ সচন্দন তুলশী পত্রং ওঁ তদবিষ্ণো পরমং পদং সদা পশ্যান্তি সুরয়ঃ দিবীব চক্ষুরাততম , ওঁ নমো নারায়ণায় শ্রী বিষ্ণুবে নমঃ।
মন্ত্র পাঠ করে ওঁ নমস্তে বহুরূপায় বিষ্ণুবে পরমাত্মনে স্বাহা বলে তুলশী পাতাটি চিৎ করে চন্দন মেখে নারায়ণের উপরে দিতে হবে। সাদা ফুলে চন্দন মেখে ওঁ তদবিষ্ণো পরমং পদং সদা পশ্যান্তি সুরয়ঃ দিবীব চক্ষুরাততম , ওঁ নমো নারায়ণায় শ্রী বিষ্ণুবে নমঃ বলে নারায়ণের উপরে সাজিয়ে দিতে হবে ।
এরপর ধূপে ফুল দিয়ে- এষ ধূপ ওঁ নমো নারায়ণায় শ্রী বিষ্ণুবে নমঃ
দীপে ফুল দিয়ে- এষ দীপ ওঁ নমো নারায়ণায় শ্রী বিষ্ণুবে নমঃ
নারায়নের সামনের ফল মিষ্টি নৈবেদ্যে ফুল দিয়ে ও অন্য যা উপকরন দেওয়া হবে তার নাম উল্লেখ করে এতানি ফলানি মিষ্টানি ওঁ নমঃ নারায়ণয় শ্রী বিষ্ণুবে নমঃ বলে ফুল তুলশী ও কুশীর জল দিয়ে পূজা দিতে হবে । নৈবেদ্য চাল, কলা, মিষ্টি সহ ঘি দিয়ে সাজানো বাটা দিলে এতৎ সঘৃত উপকরণ আমান্ন নৈবেদ্যং ওঁ নমঃ নারায়ণায় শ্রী বিষ্ণুবে নমঃ।
কুশিতে জল নিয়ে জলের গ্লাশে দিয়ে বলতে হবে ইদ্ম পদার্থ জলং ওঁ নমঃ নারায়ণায় শ্রী বিষ্ণুবে নমঃ।
আবার জল নিয়ে ইদ্ম পুনরাচমনীয়োদকং ওঁ নমো নারায়ণয় শ্রী বিষ্ণবে নমঃ।
পান সুপারি দিয়ে ইদ্ম তাম্বুলং ওঁ নমঃ নারায়ণায় শ্রী বিষ্ণবে নমঃ।
এর পর পুষ্পাঞ্জলি ।
পুষ্পাঞ্জলী মন্ত্র ;- এষ সচন্দনপুষ্পাঞ্জলি ওঁ শ্রীঁ নারায়ণায় নমঃ
এরপর শ্রী হরি নারায়ণের আরতিটি শুনুন ও সাথে পাঠ করুন।
এর পর প্রার্থনা।
পূজার শেষে ক্ষমা প্রার্থনা মন্ত্র।
ওঁযদক্ষরং পরিভ্রষ্টং মাত্রাহীনঞ্চযদ্ ভবেৎ।
পূর্ণং ভবতু ত্বৎসর্বং ত্বৎপ্রসাদাত জনার্দ্দন।।
অর্থঃ হে ভগবান,তোমার পূজারকাজে যদি কোনঅক্ষর বাদ গিয়ে থাকে বা মাত্রা বিবর্জিতহয়ে থাকে, তোমার অনুগ্রহে তা পূর্ণত্বপ্রাপ্ত হউক।
দেখুন প্রভুর বিশ্বরূপ ("বিরাট রূপ -বৈশ্বিক আকার-সর্ব-রূপ")॥
পরম ঈশ্বরের পরম কথা।
☯যখন সংসারে দেখার মতো কিছুই থাকে না, তখন মানুষ ঈশ্বরের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে।
☯ যদি কোন ঘটনার মানুষ ভয়প্রাপ্ত হয় তবে পরাজয়ই হয়। আর যে সব মানুষ শান্ত ও একাগ্র থাকে সেই জয়ী হয়।
☯ দান তাকেই বলে যাতে দানী হারায় আর যাচক প্রাপ্তি লাভ করে। কিন্তু বলিদান সেটাই হয় যা দানী মহৎকার্যে আত্মোৎসর্গ দেয় আর সমস্ত জগৎ/সংসার প্রাপ্তি লাভ করে।
☯সময় কখনো মানুষের নির্দেশিত পথে চলে না, মানুষকে সময়ের নির্দেশিত পথে চলতে হয়।
☯শক্তিমান সেই যে সহনশীল,যে সহ্য করতে পারে।
☯যখন হৃদয় থেকে ক্রোধ আর বিরোধিতা দূর হয়ে যায়, তখন সহনশক্তি ধর্মের শক্তিতে পরিনত হয়।
☯ক্রোধ থেকে প্রতিশোধের জন্ম হয় আর ধর্ম থেকে ন্যায় জন্মায়। তোমার জীবনেও যদি এমন সময় আসে, যখন তোমার উপর কোন অন্যায় হয় তবে ন্যায় করার পূর্বে নিজের ক্রোধের উপর অংকুশ অব্যশই রাখো ।
☯যে কেবল নিজের সুখ,দুঃখকে আপন করে জীবন কাটায় সে শক্তিহীন হয়ে পড়ে ,কিন্তু যে ব্যক্তি সমগ্র সমাজের সুখ,দুঃখকে আপন করে জীবন কাটায় সে শক্তিশালী হয়ে ওঠে।☯কেউ আমার অতি আপন নয় কেউ আমার পর নয়.কিন্তু যখন ধর্ম ও অধর্মের মাঝে যুদ্ধ হয় তখন
আমি স্বাভাবিক ভাবেই ধর্মের পক্ষে অবস্থান করি।
☯সমুদ্র হোক বা সংসার, যে ধর্মের নৌকা প্রস্তুতকরে সে সংসার বা সমুদ্র পার হয়ে যায়।
এছাড়া প্রভু বলেছেন
1.তুমি আমার পথে পা রেখে তো দেখো, আমি তোমার জন্য সব পথ না খুলি তো বোলনা ।2.তুমি আমার নিমিত্তে তোমার ভান্ডার খুলে তো দেখো ,আমি তোমার জন্য কুবের ভান্ডার না খুলি তো বোলনা ।
3.তুমি আমার কাছে এসে তো দেখো, আমি তোমার খেয়াল না রাখি তো বোলনা ।
4.তুমি আমার প্রচার এবং প্রসার করে তো দেখো, আমি তোমাকে মূল্যবান না বানিয়ে দিই তো বোলনা ।
5.তুমি আমাকে/ আমার চরিত্র কে মনন করে তো দেখো ,আমি তোমার ভিতরে জ্ঞানের ভাণ্ডার না ভরিয়ে দিই তো বোলনা ।
4.তুমি আমার প্রচার এবং প্রসার করে তো দেখো, আমি তোমাকে মূল্যবান না বানিয়ে দিই তো বোলনা ।
5.তুমি আমাকে/ আমার চরিত্র কে মনন করে তো দেখো ,আমি তোমার ভিতরে জ্ঞানের ভাণ্ডার না ভরিয়ে দিই তো বোলনা ।
6.তুমি আমাকে তোমার সহায়ক বানিয়ে তো দেখো, তোমাকে সবাইয়ের দাসত্ব থেকে মুক্তি না দিই তো বোলনা ।
7.তুমি আমার জন্য চোখের জল ফেলে তো দেখো, তোমার জীবনে আনন্দের সাগর না বহিয়ে দিই তো বোলনা ।
8.তুমি আমার রাস্তায় চলে তো দেখো, তোমাকে শান্তিদূত না বানিয়ে দিই তো বোলনা ।
9.তুমি নিজে কে উৎসর্গ করে তো দেখো,তোমাকে জগৎ বিখ্যাত না করি তো বোলনা ।
10.তুমি আমার কীর্তন করে তো দেখো,তোমাকে জগৎ শ্রদ্ধেয় না বানিয়ে দিই তো বোলনা ।
11.আমি কোন জড় বস্তু নই যে আমাকে চাইলেই পাওয়া যাবে, কিন্তু যে ব্যক্তি আমাকে তার নিজের অধিকার বলে মনে করেন আমি স্বয়ং নিজেকে তার অধীন বলে ভাবি।যে মানুষেরা মাতা, পিতা, গুরুজন, দেবতা, শিক্ষক, অতিথি ও জ্ঞানীগণের তথা পৃথিবীর সেবা করেন, তাঁরা জগদীশ্বরের পূজার ফল লাভ করেন।
7.তুমি আমার জন্য চোখের জল ফেলে তো দেখো, তোমার জীবনে আনন্দের সাগর না বহিয়ে দিই তো বোলনা ।
8.তুমি আমার রাস্তায় চলে তো দেখো, তোমাকে শান্তিদূত না বানিয়ে দিই তো বোলনা ।
9.তুমি নিজে কে উৎসর্গ করে তো দেখো,তোমাকে জগৎ বিখ্যাত না করি তো বোলনা ।
10.তুমি আমার কীর্তন করে তো দেখো,তোমাকে জগৎ শ্রদ্ধেয় না বানিয়ে দিই তো বোলনা ।
11.আমি কোন জড় বস্তু নই যে আমাকে চাইলেই পাওয়া যাবে, কিন্তু যে ব্যক্তি আমাকে তার নিজের অধিকার বলে মনে করেন আমি স্বয়ং নিজেকে তার অধীন বলে ভাবি।যে মানুষেরা মাতা, পিতা, গুরুজন, দেবতা, শিক্ষক, অতিথি ও জ্ঞানীগণের তথা পৃথিবীর সেবা করেন, তাঁরা জগদীশ্বরের পূজার ফল লাভ করেন।
লেখকের মন্তব্য:-এই নিবন্ধটি ভগবান জগন্নাথের ঐশ্বরিক অনুপ্রেরণায় লেখা হয়েছে। যদি কেউ বা কোনও সংস্থা এই নিবন্ধের কোনও বিষয়বস্তুর সাথে একমত না হন তবে তিনি বা তারা এটিকে দলিল প্রমাণ সহ মন্তব্যে উল্লেখ করতে পারেন এবং এটি সংশোধন করা হবে। ডকুমেন্টারি প্রমাণ এবং তথ্যের উৎস ছাড়া এই বিষয়ে যে কোনও মন্তব্যকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং অসাধু বলে গণ্য করা হবে ।
সবাই ভালো থাকুন ,সুস্থ থাকুন। সমগ্র মানব জাতি ও জীব জন্তুর কল্যাণ হোক। শান্তির জয় হোক,সত্যের জয় হোক,মানবতার জয় হোক ,সনাতন ধর্মের জয় হোক। 🙏হে প্রভু আমাকে শুধু জ্ঞান দাও , ভক্তি দাও আর শক্তি দাও🙏
লেখক পরিচিতি:- প্রবীর মহান্তী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উৎকল ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। প্রবীরের বইগুলি Amazon.com. flipkart.com, abebooks.com এর মাধ্যমে বিক্রি হয়। গুগল ও অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন থেকে সার্চ করে এখনো পর্যন্ত ১২ লাখের বেশি লোক প্রবীরের লেখা আর্টিকেল গুলি পড়েছেন।